ইন্টারনেটের গতি নিয়ে প্রশ্নের কারণ মোবাইল অপারেটরগুলো
ইন্টারনেটের গতি ও দাম, ব্রডব্যান্ড,
অনলাইন লেনদেন, পেপারলেস অফিস, পেপ্যালসহ তথ্যপ্রযুক্তি খাতের গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়ে টেকশহরডটকমের সঙ্গে কথা বলেছেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ
আহমেদ পলক। সাক্ষাতকার নিয়েছেন আল-আমীন দেওয়ান, যার শেষ পর্ব –
দেখুন প্রথম পর্ব: এবার লক্ষ্য এম-গভর্ন্যান্স
এই সাক্ষাতকার যখন নেয়া হয় তখন ভোলার
লালমোহনে সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল পার্ক উদ্বোধনে মঞ্চে উঠার প্রস্তুতি
নিচ্ছিলেন বর্তমান সরকারের তরুণ ও সর্বকনিষ্ঠ এই প্রতিমন্ত্রী। ১৬ মার্চ
স্থানীয় সংসদ নূরুন্নবী চৌধুরী শাওনের বাসভবনে বসে প্রতিমন্ত্রীকে বেশ
জোরেই কথা বলতে হচ্ছিল কারণ বাইরে হাজার হাজার মানুষের কন্ঠে ডিজিটাল
বাংলাদেশের স্লোগান। এর আগে আমরা সাংবাদিকরা দেখে এসেছি এই দ্বীপাঞ্চলেও
সাধারণ মানুষ কীভাবে তথ্যপ্রযুক্তির সুফল পাচ্ছে।
জুনাইদ আহমেদ পলক, যাকে ২০১৬ সালে
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম ইয়াং গ্লোবাল লিডার মনোনীত করে। বাংলাদেশের
তথ্যপ্রযুক্তি খাতের গতিময় অগ্রযাত্রায় এই প্রতিমন্ত্রীর ব্যাপক প্রচেষ্টা ও
সাফল্যকে উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন ম্যাসাচুসেট ইন্সটিটিউট অব
টেকনোলজিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ফিনটেকের তথ্য
বিশ্লেষক ডেভিড এম শায়া।
টেক শহর : দেশে ইন্টারনেটের দাম কি সহনীয়?
জুনাইদ আহমেদ পলক : ব্যান্ডউইথের দাম ছিল প্রায় ৭৮ হাজার টাকা। সেখান হতে কমিয়ে কিন্তু মাত্র ৪০০ টাকায় এক এমবিপিএস ব্যান্ডউইথ আনা হয়েছে।
টেক শহর : নাগরিকরা কি সহজে ইন্টারনেট পাচ্ছে?
জুনাইদ আহমেদ পলক :
দেখুন আমি প্রথমেই বলবো যে আজকে লালমোহন পর্যন্ত আমরা লার্নিং-আর্নিং
কমসূচি নিয়ে এসেছি । আজকে লালমোহনের মতো দ্বীপ অঞ্চলে ডিজিটাল
কানেক্টিভিটির ছোঁয়া পৌঁছে দেয়া হয়েছে । যদি আজ হতে ৮ বছর আগের কথা চিন্তা
করেন লালমোহন তো দূরের কথা, বাংলাদেশের ঢাকার বাইরে কোনো ব্রডব্যান্ড
কানেক্টিভিটি ছিল না। এখন লার্নিং আর্নিং প্রশিক্ষণ করে মানুষ ইন্টারনেটে
টাকা আয় করছে।
টেক শহর : দেশে ইন্টারনেট সংযোগের মানচিত্র কত বড় হলো?
জুনাইদ আহমেদ পলক : ২০১৩
সালে থ্রিজি লঞ্চ করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। তার
পর হতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শে
আমরা কিন্তু ফাইবার অপটিক ক্যাবল নিয়ে গিয়েছি উপজেলা পর্যন্ত। এখন লালমোহন
সদর উপজেলায় ফিক্স ব্রডব্যান্ড কানেক্টিভিটি আমরা নিয়ে গিয়েছি। গত ৮ বছরে
ইন্টারনেট কানেক্টিভিটি বা সাবস্ক্রাইবের সংখার সাড়ে ৬ কোটি।
আমরা ইতোমধ্যেই সবগুলো উপজেলায় ১৮ হাজার
১৩০টি দপ্তরে ইন্টারনেট হাইস্পিড ফাইবার অপটিক কনেক্টিভিটি পৌঁছে দিয়েছি।
হাইস্পিড ইন্টারনেট সংযোগসহ আমাদের ইতোমধ্যেই সাড়ে পাঁচ হাজার ল্যাব শেখ
রাসেল ডিজিটাল ল্যাব হয়েছে, করা হয়েছ ২৭ হাজার মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম।
ITHelpTune : ইন্টারনেট নিয়ে পরবর্তী গন্তব্য?
জুনাইদ আহমেদ পলক : এখন আমরা চাচ্ছি যে ইউনিযন পর্যন্ত, ডিজিটাল সেন্টার পর্যন্ত ফাইবার অপটিক ক্যাবল নিয়ে যেতে।
আমরা ইনফো সরকার ৩ প্রকল্পের আওতায় ২০১৮
সালের ডিসেম্বরের মধ্যে আরও ২ হাজার ৬০০ ইউনিয়নে ডিজিটাল সেন্টার পর্যন্ত
ফাইবার অপটিক পৌঁছে দেবো। আমরা কানেক্টেড বাংলাদেশ নামে আরেকটি প্রকল্প
গ্রহণ করেছি, যার মাধ্যমে বাকী ইউনিয়নে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সংযোগ
পৌঁছে দেবো। তার মানে বাংলাদেশের সাড়ে ৪ হাজার ইউনিয়ন পর্যন্ত আমরা ফাইবার
অপটিক পৌঁছে দিচ্ছি।
সারা বাংলাদেশে ১ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান রয়েছে, প্রায় ৪ কোটি ২৭ লাখ ছাত্র-ছাত্রী পড়াশোনা করছে।
প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শে আমাদের
অন্যতম লক্ষ্য আমরা আগামী ২০২১ সালের মধ্যে এই এক লাখ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের
স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হাইস্পিড
ব্রডব্যান্ড কানেক্টিভিটি নিশ্চিত করবো।
আগামী ৩ বছরে আরও ১৫ হাজার শেখ রাসেল
ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হবে। যার ফলে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত, তৃণমূল
পর্যন্ত, আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে আমরা হাইস্পিড ইন্টারনেট পৌঁছে
দেবো।
২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ মানুষকে ইন্টারনেট কানেক্টিভিটির আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে।
টেক শহর : ইন্টানেটের গতি নিয়ে প্রায়ই প্রশ্ন আসে-সমস্যাটা কোথায় ?
জুনাইদ আহমেদ পলক :
কোথাও কোথাও ইন্টারনেটের গতি নিয়ে যে প্রশ্ন অনেকের তার কারণ মোবাইল
টেলকোগুলোর । এরা শুধু ব্যবসার জন্য, বাণিজ্যের জন্য, তাদের লাভের জন্য
চেষ্টা করছে।
No comments